ঢাকাই সিনেমার সুপরিচিত অভিনেত্রী নাসরিন। একজন অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিষেক হলেও কৌতুক অভিনেতা দিলদারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি।
এরপর নানামুখী চরিত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন নাসরিন। কখনো বোন, কখনো ভাবী, কখনো সহ-নায়িকা, নায়িকা আবার কখনোবা প্রতি-নায়িকার চরিত্রে ক্রমশই উজ্জল হয়ে ওঠেন তিনি।
শুধু অভিনেত্রী নয়, একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবেও বেশ কদর রয়েছে তার। চলচ্চিত্রে এমন একটা সময় ছিল, যখন প্রতিটি সিনেমাতেই আইটেম গানে নাসরিন ছিলেন অপরিহার্য। তবে বর্তমানে সিনেমা অঙ্গনে তার উপস্থিতি খুবই কম। এক সময় যে অভিনেত্রী শিডিউল দিতে হিমশিম খেতেন, এখন তিনি অনেকটাই বেকার।
চলচ্চিত্রে কাজের প্রসঙ্গে নাসরিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একটা সময় ছিলো শিডিউল দেয়া নিয়ে আতঙ্কে থাকতাম। চারদিকে কাজ আর কাজ। শিডিউল দিতে পারতাম না সবাইকে। কত কথা শুনতে হয়েছে। কতজনের রাগ ভাঙাতে হয়েছে। কিন্তু এখন একদম কাজ নেই। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক ভাইয়ের পরিচালনায় ‘আনন্দ অশ্রু’ সিনেমায় কাজ করছি, যা আর এক দুইদিন করলেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তারপর আর কোনো কাজ নেই। বেকার। এখন এমন দিন এলো না খেয়ে থাকার উপক্রম।’
এফডিসির সিনিয়র পরিচালকরা সিনেমায় অনিয়মিত হওয়ার কারণেই তার মতো সিনিয়র শিল্পীরা কাজ পাচ্ছেন না বলে মনে করেন নাসরিন। এখন নতুন পরিচালকদের প্রচুর কাজ হচ্ছে। কিন্তু এই পরিচালকদের সঙ্গে আগেকার শিল্পীদের পরিচয়-জানাশোনা কম থাকায় সিনিয়র শিল্পীদের কাজের হার কমে গেছে।
নাসরিনের ভাষ্য, ‘আমরা নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। তাদের সঙ্গে মিলেমিশে নতুন করে ইন্ডাস্ট্রিতে সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতে চাই। সমস্যা হলো নতুন পরিচালকরা আমাদের এড়িয়ে চলে। গুণের চেয়ে গ্ল্যামার আর বন্ধু-সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা মনে করে আমাদের নিয়ে কাজ করলে ইচ্ছেমতো ‘তুই, তুমি’ বলা যায় না। কাজ ছাড়া কোনো আড্ডায় পাওয়া যায় না।’
তবে নতুন পরিচালকদের সঙ্গে কাজের আরও একটি সমস্যার কথা তুলে ধরে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘বর্তমান সময়ের পরিচালকদের আরেকটা সমস্যা হলো তারা মনে করে, তাদের মতো আর কেউ কাজ করতে জানে না। তারাই সব জানে ও বোঝে। ভীষণ অহংকারী। তারা সম্মানও দিতে চায় না সিনিয়র শিল্পীদের। কেমন যেন সবাই। এসবের জন্য আরও কাজ করতে মন চায় না।’